১৬ই জানুয়ারি, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ , ২রা মাঘ, ১৪২৭ বঙ্গাব্দ
নিজস্ব প্রতিবেদক :
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে শহীদ ডা. মিলন পালন করেছিলেন অকুতোভয় সৈনিকের ভূমিকা। তার আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে নয় বছরের স্বৈরাচারবিরোধী গণতান্ত্রিক সংগ্রাম চূড়ান্ত বিজয়ের দিকে ধাবিত হয়।
বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বাণীতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একথা বলেন। প্রতিবছর ২৭ নভেম্বর এরশাদবিরোধী আন্দোলনে শহীদ ডা. মিলন দিবস পালন করা হয়। মির্জা ফখরুল বলেন, স্বৈরাচার হটিয়ে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় ডা. মিলন ছিলেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞা। বুকের রক্ত ঢেলে তিনি এদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পথ প্রশস্ত করে গেছেন। যে পথ ধরে দেশে স্বৈরাচারের পতন ঘটে এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশে গণতন্ত্রের নবযাত্রা শুরু হয়। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বিগত ১১ বছর ধরে আবারও মানুষের সব অধিকার কেড়ে নিয়ে গণতন্ত্রকে সমাধিস্থ করেছে। দেশের মানুষ তাদের অধিকার হারিয়ে ফেলেছে। জনগণের কাছ থেকে দেশের মালিকানা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এখন গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার মাধ্যমেই আমরা কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারি। সেজন্যই প্রথমে আমাদের গণতন্ত্রের আপসহীন নেত্রী খালেদা জিয়াকে স্বৈরাচারের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করতে হবে। সে লক্ষ্য অর্জনে শহীদ ডা. মিলনের আত্মত্যাগ আমাদেরকে প্রেরণা জোগাবে।
নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপিতে এখন চতুর্মুখী সংকট চলছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, দলটি বার বার আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েও আন্দোলন করতে পারেনি। একদিকে তারা অপরাজনীতির জন্য জনগণের কাছে নিন্দিত, অপরদিকে দলের ভেতরেও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষ সংকট চলছে। অভ্যন্তরীণ সংকট মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে তারা। সবক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়ে দলটি এখন নির্বাচন কমিশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে মাঠে নেমেছে। গতকাল সোমবার মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন তারা (বিএনপি) অপপ্রচার শুরু করেছে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে। নানা অনিয়ম অসদাচরণের অভিযোগ এনে বিএনপি মূলত নির্বাচন কমিশনকে বিতর্কিত করতে চায়। তাদের এই অপচেষ্টাও হালে পানি পাবে না। কেননা জনগণ তাদেরকে বারবার প্রত্যাখ্যান করেছে। উপনির্বাচনে প্রচারণা না চালিয়ে, পোলিং এজেন্ট না দিয়ে, ভোট কেন্দ্রে না এসে ভোটের দিন হঠাৎ করে দুপুর বেলায় নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করা তাদের অপকৌশলের অংশ। নির্বাচন কমিশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার এই অপকৌশল এরইমধ্যে মরচে ধরে গেছে, ভোঁতা হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি নির্বাচন কমিশন নিয়ে নানা কথা বলে অথচ কমিশনে তাদের প্রস্তাবিত একজন সদস্য রয়েছে। কমিশনের সব সদস্য বিএনপি-সমর্থকদের বসেই বা লাভ কি? প্রধান নির্বাচন কমিশনার থেকে শুরু করে সব কমিশনার যদি বিএনপির হয়, কমিশন তো ভোট দেবে না, ভোট দেবে জনগণ। তারাতো ভোটারদের আস্থা হারিয়ে ফেলেছে, তাই জনগণের ওপর প্রতিশোধ নিতে শুরু করে আগুন সন্ত্রাসের মাধ্যমে। সংকটের কারণে বিএনপির দেশ ও জনগণের কথা ভাববার সময় নেই বলেও এ সময় মতামত ব্যক্ত করেন কাদের।
বিএনপির মহাসচিবকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, দেশ এখন উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রতিটি জনপদে উন্নয়নের ছোঁয়া। আপনারা দেখতে না পেলেও জনগণ দেখতে পাচ্ছে। আপনারাতো দিনের আলোতেও রাতের অন্ধকার দেখতে পান। দেশে কোন দুঃশাসন নেই। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সুশাসনের দিকে আমাদের যে অভিযাত্রা তাতে সমালোচনা না করে সহযোগী হোন। গণতন্ত্রের এগিয়ে যাওয়ার পথকে মসৃন করতে দায়িত্বশীল ও গঠনমূলক রাজনৈতিক দলের ভূমিকা পালন করুন। মন্ত্রী বলেন, বিএনপি ঘরে বসে ফেসবুক গণমাধ্যম বিবৃতি ছাড়া জনগণের ইস্যু নিয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচি দেওয়ার কথা শুধু ভুলেই যায়নি, সক্ষমতাও হারিয়েছে। তিনি বলেন, বিজয়ের চেতনা ধারণ করে মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে জাঁতি আজ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। বিজয়ের এ মাসে সাম্প্রদায়িকতার মূলোৎপাটনের মাধ্যমে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে আসুন আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করি, সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকি।
নিজস্ব প্রতিবেদক :
নতজানু সরকার ক্ষমতায় থাকলে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব থাকে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, এমন একটি সরকারের অধীনে দেশের জনগণ বসবাস করছে, যেখানে তারা দেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বকে বিক্রি করে দিয়েছে। এ দেশের মানুষের মানসম্মান বলে আর কিছু নেই। গতকাল সোমবার সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বাংলাদেশ সীমান্তে নিরীহ মানুষ হত্যার প্রতিবাদে বিএনপির পূর্বঘোষিত কালো পতাকা ও কালো ব্যাচ ধারণ কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী অভিযোগ করে বলেন, গত সাড়ে ১২ বছরে সীমান্তে পাঁচ শতাধিক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু সরকার তার নতজানু নীতির কারণে একটা কড়া প্রতিবাদও করতে পারে না। এখানে যদি সত্যিকারের জনগণের সরকার থাকতো, তাহলে এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারত। যেহেতু এই সরকারের গণভিত্তি নেই তাই তারা অন্য দেশের কাছে নতজানু হয়ে থাকে। নিজের দেশের জনগণের ওপর তারা জুলুম চালায়। তিনি আরও বলেন, যারা সরকারের সমালোচনা করে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়, কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। না হয় গুম করে অথবা বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হতে হয়। অথচ অন্য দেশ এত অন্যায় করছে সেখানে কোনো ধরনের প্রতিবাদ নেই। কোনো ধরনের কূটনৈতিক তৎপরতাও নেই।
কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির সহ দফতর সম্পাদক মো. মুনির হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা কাজী রওনকুল ইসলাম টিপু, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক এজিএম শামসুল হক, বিএনপি নেতা আহসান ঊদ্দিন খান শিপন, শেখ আবদুল হালিম খোকন, মাহবুব মাসুম শান্ত, এবিএম আবদুর রাজ্জাক, আবদুল আউয়াল, কাজী মনির প্রমুখ।
নিজস্ব প্রতিবেদক :
আওয়ামী লীগে অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র চর্চার পাশাপাশি দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালন নীতি অনুসরণ করা হয় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বৃহস্পতিবার এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ একটি সুশৃঙ্খল রাজনৈতিক দল। সাংগঠনিকভাবে কোনো অনিয়ম, দূর্নীতি প্রশ্রয় দেওয়া হয় না। যেকোনো অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া মাত্রই নেয়া হচ্ছে সাংগঠনিক ব্যবস্থা। তিনি বলেন, অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা স্বপ্রণোদিত হয়ে যে শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছিলেন, তা এখনও চলমান আছে। ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। রাজনৈতিক পরিচয়ে অপরাধ করার কোনো সুযোগ আওয়ামী লীগে নেই। দল কখনও কোনো অপরাধীকে রক্ষা করার ঢাল হবে না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, শেখ হাসিনার কাছে অপরাধীর পরিচয় অপরাধীই।।গুটি কয়েক মানুষের অপরাধের জন্য সরকারের অনন্য অর্জনগুলো ম্লান হতে দেওয়া যায় না। অপরাধের দায় ব্যক্তির, দলের নয়। সম্প্রতি দুটি জেলায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে অব্যাহতি দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি কেন্দ্র হতে তৃণমূলের জন্য দলীয় প্রধানের একটি বার্তা। দলের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলাকে এখন গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে। সততা, নিষ্ঠা এবং দলের প্রতি ত্যাগের স্বীকৃতিস্বরুপ জেলা থেকে কেন্দ্রে পুরস্কৃত করা হয়েছে।
কাদের বলেন, পুরো দেশে সাংগঠনিক নেতৃত্বের ওপর দলীয় সভাপতির দৃষ্টি রয়েছে। শেখ হাসিনার কাছে সকলের পারফরম্যান্সের রিপোর্টও রয়েছে। যারা বর্তমানে বিভিন্ন পর্যায়ে জনপ্রতিনিধি রয়েছেন, দলীয় দায়িত্ব পালন করছেন, তাদের কার্যক্রমও গুরুত্ব সহকারে মনিটর করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সকল স্তরের নেতাকর্মীদের সাংগঠনিক শৃঙ্খলা মেনে এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুসরণের মাধ্যমে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান তিনি। নেতাকর্মীদের হুঁশিয়ার করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, মানুষের ভাগ্য বদলের জন্য বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া রাজনৈতিক সংগঠন আওয়ামী লীগ কারো ভাগ্যবদল ও স্বার্থসিদ্ধির জন্য নয়। দলের প্রতি ত্যাগ, সততা ও নিষ্ঠা থাকলে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তৃণমূল থেকে সময় মতো যে কাউকে যেকোনো দায়িত্ব দল এবং সরকারে দিতে পারেন।
করোনার দুর্যোগে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কোন প্রভাব পড়েনি- মতিয়া চৌধুরী
শেরপুর প্রতিনিধি :
জাতীয় সংসদের কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি, আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ও নকলা-নালিতাবাড়ীর এমপি মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, করোনার দুর্যোগে পৃথিবীর উন্নত দেশ সমূহ কাইত (অর্থনৈতিক বিপর্যয়) হয়ে পড়লেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় এর তেমন কোন প্রভাব পড়েনি। বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) দিনব্যাপী নকলা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সোলার ও মসজিদ মন্দিরে আর্থিক অনুদান বিতরণ উপলক্ষে আলোচনায় সভায় মতিয়া চৌধুরী এসব কথা বলেন।
ভাস্কর্য স্থাপনের বিষয়ে তিনি বলেন, পৃথিবীর অনেক মুসলিম দেশেই দৃশ্যমান ভাস্কর্য রয়েছে। ইরানের সিরাজ শহরে আল্লামা শেখ সাদির ভাস্কর্য বিদ্যমান রয়েছে যা আমি নিজ চোখে দেখে এসেছি। কাজেই ভাস্কর্য আর মুর্তিস্থাপনের বিষয়টি যে পার্থক্য রয়েছে তা না বুঝে একটি মহল ঘোলাপানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে।
এসময় পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম, ইউএনও জাহিদুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিল্লাল হোসেন, ওসি মুশফিকুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম জিন্নাহ, পৌর মেয়র হাফিজুর রহমান লিটন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাহবুবুল আলম সোহাগ, সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানগণ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গত দুইদিনে মতিয়া চৌধুরী নকলা উপজেলার ২৪টি মাদরাসা ও ১১৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণির প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে সোলার বাতি, মসজিদ মন্দিরে অনুদান ও ঢেউটিন বিতরণ করেন।
স্টাফ রিপোর্টার :
২০০৪ সালের ভয়াল ও বিভীষিকাময় ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে জননেত্রী শেখ হাসিনার উপর সংগঠিত হওয়া গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগ কর্তৃক আয়োজিত প্রতিবাদী সমাবেশ ও আলোচনা সভা ২১ আগস্ট, ২০২০ রোজ শুক্রবার সকাল ১০টায় ঘটিকায় নগরীর অনুভব কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিবাদী সমাবেশ ও আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগ এর সংগ্রামী সভাপতি শ্রদ্ধাভাজন জননেতা এডভোকেট মোঃ জহিরুল হক খোকা। ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামীলীগের সংগ্রামী সাধারন সম্পাদক এডভোকেট মো: মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুলের পরিচালনায় সমাবেশে ও আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগ এর সহ-সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দীন আহম্মেদ এম.পি, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এর সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর ও জেলা আওয়ামী লীগ এর উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ড. আনোয়ারুল ইসলাম, যুব বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব রেজাউল হাসান বাবু, জেলা যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক শাহ শওকত উসমান লিটন, জেলা কৃষকলীগের সভাপতি মো: আব্দুর রহিম মিন্টু, মহানগর শ্রমিকলীগের সভাপতি পুলক রায় চৌধুরী, জেলা মহিলালীগের সাধারন সম্পাদক সেলিনা রশিদ, মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের আহবায়ক মোফাখখার হোসেন খোকন প্রমুখ।
ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন এর জননন্দিত মেয়র মোঃ ইকরামুল হক টিটু, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউসুফ খান পাঠান, জেলা আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা ডা: মীর্জা মানজুরুল হক, জেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট কবির উদ্দিন ভুইয়া, এডভোকেট ফরিদ আহমেদ, আলহাজ্ব মমতাজ উদ্দিন মন্তা, যুগ্ন সাধারন সম্পাদক এম এ কুদ্দুছ, শওকত জাহান মুকুল, সাংগঠনিক সম্পাদক আহাম্মদ আলী আকন্দ, দপ্তর সম্পাদক অধ্যক্ষ আবু সাঈদ দীন ইসলাম ফকরুল, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব এডভোকেট এবি সিদ্দিক, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা: মমিনুর রহমান জিন্নাহ, ত্রান ও সমাজ কল্যান সম্পাদক অধ্যক্ষ আতিকুর রহমান, সম্মানিত সদস্য আলহাজ্ব এমদাদুল হক মন্ডল, শাহ কুতুব চৌধুরী, এডভোকেট ইমদাদুল হক সেলিম, তারাকান্দা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ জামাল উদ্দিন, আওয়ামীলীগ নেতা মো: হুমায়ুন কবীর হিমেল, আলহাজ্ব ইকবাল হোসেন, সেলিম আলমগীর, শ্রমিকলীগ নেতা মো: রাকিবুল ইসলাম শাহীন, মহানগর কৃষকলীগের সহসভাপতি নুর আলী তালুকদার, যুগ্ন সম্পাদক ইঞ্জনিয়ার ফিজার তালুকদার, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন শাহানশাহ, সুমন তাজ, জেলা যুবলীগ নেতা আনোয়ার জাহান শরীফ, গোলাম মেহেদী হাসান, অধ্যাপক জাকির হোসেন, মাহবুবুল আলম বাবলু, মো: আনোয়ারুল ইসলাম, জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি নুরজাহান মিতু, নাহিদা ইকবাল, সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপ্না খন্দকার, জেসমিন মিনু, মীর সালমা, মহানগর মহিলালীগের সহসভাপতি শাহিনুর আক্তার মিলি, মহিলা শ্রমিকলীগ নেত্রী সৈয়দা রোকেয়া আফসারী শিখা, যুব মহিলালীগ নেত্রী শারমিন লাকী, মাহমুদা হোসেন মলি সহ ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মানিত সদস্যবৃন্দ এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিবাদী সমাবেশে ও আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনার শুরুতে ২১ আগষ্ট সহ সকল শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে ১মিনিট নিরবতা পালন করা হয় এবং আলোচনা শেষে সকল শহীদদের আত্বার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন শ্রম বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট আলহাজ্ব এবি সিদ্দিক। ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগ এর সহ-সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দীন আহম্মেদ এম.পি বলেন, জাতির জনকের কন্যা আওয়ামীলীগের সভাপতি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী মেখ হাসিনাকে ১৭বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। মহান আল্লাহতালা আমাদের মহান নেত্রীকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। ২১আগষ্ট গ্রেনেড হামলা দিবসের আলোচনা সভায় ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট জহিরুল হক খোকা বলেন, বঙ্গবন্ধু কণ্যা হননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার মধ্যদিয়ে ষড়যন্ত্রকারীরা আওয়ামীলীগকে নিশ্চন্ন করতে চেয়ে ছিল। তাদের চেষ্টা ব্যার্থ হয়েছে। মহান আল্লাহতালা আমাদেও নেত্রীকে রক্ষা করেছেন। তবে নেত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে অনেক তাজা প্রান শহীদ হয়েছে। আমরা এই ন্যাক্কার জনক জগন্যতম হত্যাকান্ডের কঠিন বিচার চাই। যাতে আর কেই এমন ন্যাকার জনক ঘঁন া ঘটাতে না পারে। ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামীলীগ এর বিপ্লবী সাধারন সম্পাদক জননেতা এডভোকেট মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল বলেন, বারবার জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেও ষড়যন্ত্রকারী তাদের উদ্দেশ্য সফল করতে পারেনি। মহান আল্লাহতালা আমাদেও প্রানপ্রিয় নেত্রীকে প্রানে বাঁচিয়ে রেখেছেন। তিনি সকল শহীদের আত্বার মাগফিরাত কামনা করেন ও ষড়যন্ত্রকারী ও গ্রেনেট হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমুলক কঠোর বিচার দাবী করেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকার দেশের বন্যাপ্রবণ এলাকার দুর্গত মানুষের আশ্রয়ের জন্য উঁচু করে বাঁধের মত ‘বে’ তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান। তিনি বলেন, “যখন বন্যা হবে, তখন ওই এলাকার বানভাসি মানুষ সেই বে‘তে অবস্থান নিতে পারবে। ওই বে এমন পরিসরে তৈরি করা হবে যাতে মানুষের পাশাপাশি গবাদিপশুও রাখা যায়।” বুধবার বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) আয়োজিত এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় সরকারের এই পরিকল্পনার কথা জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, “বন্যাপ্রবণ এলাকার নদীগুলোর বাঁধ উঁচু করে বানালে অতিরিক্ত পানি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তবে আমাদের দেশে প্রতিবছর স্বল্প মেয়াদের বন্যার জন্য প্রস্তুতি রাখতে হবে। তাই দেশের বন্যাপ্রবণ এলাকায় উঁচু করে বে তৈরি করা হবে।” দেশের বন্যা ও বর্ষাকালের পানির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য সরকার যে নেদারল্যান্ডসের মডেল অনুসরণে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নিয়েছে, সে কথা আলোচনায় তুলে ধরেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি জানান, স্বল্প মেয়াদী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বানভাসি মানুষের সেবার জন্য নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ডে ৬০টি মাল্টিপারপাস বোট তৈরি করা হচ্ছে। এবারের বর্ষা মৌসুমে দেশে তিন দফা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অর্ধ কোটি মানুষ। ৩৭ জেলায় এক হাজার ৩২৩ কোটি টাকার ফসল বানের পানিতে নষ্ট হয়েছে বলে হিসাব দিয়েছে সরকার। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী জানান, চলমান করোনাভাইরাস মহামারী আর বন্যায় সঙ্কটে পড়া দেশের প্রায় ৫ কোটি মানুষের তালিকা তৈরি করেছে সরকার। সেই তালিকা ধরেই ত্রাণ বিতরণের ব্যবস্থা হয়েছে। “প্রতিদিন আমরা গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসরণ করছি। যেখানে ত্রাণের অপ্রতুলতার খবর পাচ্ছি, সেখানেই আমরা ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছি। প্রত্যেক উপজেলায় সুবিধাভোগীদের তালিকা টাঙিয়ে দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তাতে স্বচ্ছতা তৈরি হবে।”
‘সাম্প্রতিক বন্যা: ক্ষয়ক্ষতি ও করণীয়’ শীর্ষক ওই আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে সিপিডির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, বাংলাদেশে বন্যা হয় মূলত বর্ষায় ভারতের আসাম ও মেঘলায় থেকে নেমে আসা পানির কারণে। “বন্যার পানির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় ১৯৭২ সালে দুই দেশে বঙ্গবন্ধু ও ইন্দিরা গান্ধীর সরকার মিলে যে যৌথ নদী কমিশন গঠন করেছিল, তা এখন অকার্যকর। এ কমিশনকে কার্যকর করে বাংলাদেশের বন্যা ও বর্ষাকালীন পানির টেকসই ব্যবস্থা করা সম্ভব।” সুনামগঞ্জের ডিসি আব্দুল আহাদ বলেন, চলমান বন্যায় হাওড় অঞ্চলে সমন্বয় করে ৩৬৩টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে গবাদিপশুও আশ্রয় পাচ্ছে। এবার দেশের অনেক এলাকায় বন্যা স্থায়ী হয়েছে ৪০ দিনের বেশিএবার দেশের অনেক এলাকায় বন্যা স্থায়ী হয়েছে ৪০ দিনের বেশিভবিষ্যতে উঁচু জায়গায় ধান মাড়াইয়ের ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “সেখানে ধান শুকানোর ব্যবস্থাও করা হবে।”
হাওড় এলাকায় আগাম বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বাঁচাতে শস্য বীমা চালু করার জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাব রাখেন সুনামগঞ্জের ডিসি।
তিনি বলেন, হাওড় এলাকায় বর্ষায় বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে পানি থাকে। সে সময় বজ্রপাতের প্রবণতাও বেশি দেখা যায়। প্রতিবছরই বজ্রপাতে মানুষের মৃত্যু হয়। প্রাণহানি কমাতে হাওড় এলাকায় বজ্রপাত প্রতিরোধক দ- স্থাপন করা দরকার। ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ‘ডেল্টা গভর্ন্যান্স কাউন্সিল’ গঠন বন্যাপ্রবণ এলাকায় অনেক দিন ধরে কাজ করার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন অধ্যাপক আইনুন নিশাত বলেন, “ওই এলাকার জনগণ আমাকে বলেছেন, তারা ত্রাণ চান না, বাঁধ চান। মানুষকে ত্রাণ দেওয়ার চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল বন্যাপ্রবণ এলাকার নদীর পাড়ে উঁচু করে বাঁধ দিয়ে পানি নিয়ন্ত্রণ করা।” তিনি বলেন, বন্যা বন্ধ করা যাবে না, তবে এলাকাভিত্তিক পানির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মানুষের জানমালের ক্ষতি কমানো সম্ভব। পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোতাহর হোসেন বলেন, সরকার ইতিমধ্যে স্বল্প ও মধ্য মেয়াদি কিছু পরিকল্পনা নিয়েছে।
“তারই ধারাবাহিকতায় আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে বন্যাপ্রবণ এলাকার উঁচু জায়গায় এক কিলোমিটার পর পর পাবলিক টয়লেট করার ব্যবস্থা নিয়েছি। মধ্য মেয়াদী পরিকল্পনার আওতায় বাঁধ উঁচু করা, বে নির্মাণসহ সমন্বিত উদ্যোগ বাস্তবায়ন করার পরিকল্পা গ্রহণ করা হয়েছে।” আলোচনার শুরুতে মূল প্রবন্ধে সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ অ্যসোসিয়েটস মো. কামরুজ্জামান বলেন, এবারের বন্যায় ৭ কোটি ৪৫ লাখ ডলারের সম্পদ এবং গবাদী পশুর ক্ষতি হয়েছে। ৮১ হাজার ১৭৯টি টিউবওয়েল ডুবে গেছে। ৭৩ হাজার ৩৪৩টি ল্যাট্রিন ধংস হয়েছে এবং ১ হাজার ৯০০টি স্কুল ভবন নষ্ট হয়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে জামালপুর জেলা।
নিজস্ব প্রতিবেদক : এবার তিন দফার বন্যায় বাংলাদেশের ৩৭টি জেলায় এক হাজার ৩২৩ কোটি টাকার ফসল নষ্ট হয়েছে বলে হিসাব দিয়েছে সরকার। কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বুধবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “তিন দফার বন্যায় ৩৭টি জেলায় সব মিলিয়ে এক হাজার ৩২৩ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। “২ লাখ ৫৭ হাজার ১৪৮ হেক্টর জমির ফসল বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়, এর মধ্যে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৮১৪ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। বন্যায় ১২ লাখ ৭২ হাজার ১৫১ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।” এবার ৩২ হাজার ২১৩ হেক্টর জমির ৩৩৪ কোটি টাকার আউশ ধান, ৭০ হাজার ৮২০ হেক্টর জমির ৩৮০ কোটি টাকার আমন ধান এবং সাত হাজার ৯১৮ হেক্টর জমির আমন বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে তথ্য দেন কৃষিমন্ত্রী। এছাড়া ২৩৫ কোটি টাকার সবজি এবং ২১১ কোটি টাকার পাটের ক্ষতি হয়েছে বলে জানান তিনি।
রাজ্জাক বলেন, “এ বছর বন্যার পূর্বাভাস পাওয়ার সাথে সাথে কৃষি মন্ত্রণালয় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাসহ সকলেই ছিলেন সতর্ক। ফসলের ক্ষতি কমিয়ে আনার জন্য কৃষককে দেওয়া হয়েছিল প্রয়োজনীয় পরামর্শ।” প্রথম দফায় ২৫ জুন থেকে ৯ জুলাই পর্যন্ত ১৪ জেলায় বন্যায় ৪১ হাজার ৯১৮ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রথম দফার বন্যায় ৩৩৯ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি এবং তিন লাখ ৪৩ হাজার ৭৫৭ কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে জানান কৃষিমন্ত্রী। তিনি বলেন, “দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় ১১ জুলাই থেকে ১২ অগাস্ট পর্যন্ত ৩৭টি জেলায় ৩৪টি ফসলের এক লাখ ১৬ হাজার ৮৯৬ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ ৯৭৪ কোটি টাকা, আর নয় লাখ ২৯ হাজার ১৩৯ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।” বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা ক্ষতি পুষিয়ে যেন ঘুরে দাঁড়াতে পারেন, সেজন্য বিভিন্ন প্রণোদনা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে ১৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকার কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় দুই লাখ ৩৯ হাজার ৬৩১ জন ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মধ্যে শাকসবজি চাষের জন্য বিনামূল্যে বীজ বিতরণ করা হয়েছে জানান কৃষিমন্ত্রী রাজ্জাক।
তিনি বলেন, এই কর্মসূচির আওতায় শাকসবজি চাষের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পারিবারিক পুষ্টি নিশ্চিত করতে ১০ কোটি ২৭ লাখ টাকা ব্যয়ে এক লাখ ৫১ হাজার ৬০০ জন কৃষককে লাল শাক, ডাটা শাক, পালং শাক, বরবটি, শিম, শসা, লাউ বীজ বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে। “অধিক ক্ষতিগ্রস্ত জেলায় কৃষকদের জমিতে কমিউনিটিভিত্তিক বীজতলার মাধ্যমে দুই কোটি ১৫ লাখ টাকার চারা উৎপাদন ও বিনামূল্যে বিতরণ কর্মসূচির আওতায় ৩৩টি জেলায় ৩৫ হাজার ১৬৬ জন কৃষকের মাঝে এসব চারা বিতরণ করা হবে। ইতোমধ্যে ৫২৫ হেক্টর জমিতে এই বীজতলা স্থাপন করা হয়েছে।”
এছাড়া ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে ভাসমান বেডে ধানের চারা উৎপাদন করা হবে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, এর আওতায় ৪০ জেলায় পাঁচ হাজার ৬০টি ভাসমান বেডে রোপা আমন ধানের বীজতলা প্রস্তুত করা হচ্ছে, এতে এক হাজার ২৬৫ জন কৃষক সরাসরি উপকার পাবে। ইতোমধ্যে চার হাজার ৩০৮টি ভাসমান বেডে রোপা আমন ধানের বীজতলা স্থাপন করা হয়েছে বলে তথ্য দেন কৃষিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ২৫টি জেলায় ৬১ হাজার ৬০০টি ট্রে-তে রোপা আমন ধানের বীজতলা তৈরি করে সেগুলো এক হাজার ৬০০ জন কৃষককে বিতরণ করা হবে। এরমধ্যে ২২ হাজার ৭৭২টি ট্রে-তে বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। “বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় আমন চাষ সম্ভব না হলে মাসকালাই বীজ ও সার বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে। এর আওতায় ৩৫ জেলায় ৫০ হাজার কৃষককে তিন কোটি ৮২ লাখ টাকার মাসকালাই বীজ, ডিএপি, এমওপি সার বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে।”
১৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে আরেকটি কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় নয় লাখ ২৯ হাজার ১৯৪ জন কৃষকদের প্রত্যেককে গম, সরিষা, চীনা বাদাম, সূর্যমূখী, খেসারী, পেঁয়াজ. মরিচ, টমোটো আবাদের জন্য উপকরণ সরবরাহ করা হবে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী। তিনি বলেন, “পারিবারিক কৃষির আওতায় সবজি পুষ্টি বাগান কর্মসূচির আওতায় ৩৭ কোটি ৩৬ লাখ ২২ হাজার টাকা ৬৪ জেলার এক লাখ ৪১ হাজার ৭৯২ জন কৃষককের মাঝে বিনামূল্যে বীজ, চারা ও সার দেওয়া হয়েছে।” এর বাইরে ২০২০-২১ অর্থবছরে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন কর্মসূচি প্রস্তাব করা হয়েছে জানিয়ে রাজ্জাক বলেন, এর আওতায় ১৫২ কোটি ১৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬৪ জেলায় ৪৯১টি উপজেলার চার হাজার ৫৯৭টি ইউনিয়ন ও ১৪০টি পৌরসভার চার লাখ ৭৩ হাজার ৭০০ কৃষককে বিনামূল্যে বীজ ও সার দেওয়া হবে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জেলায় বীজ, সারসহ বিভিন্ন প্রণোদনামূলক কার্যক্রম বেগবান, তদারকি ও সমন্বয়ের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত ও যুগ্ম-সচিবদের নেতৃত্বে ১৪টি কমিটিতে ৭০ জন কর্মকর্তা কাজ করছেন বলে জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, “কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন সকল দপ্তর করোনা ঝূঁকির মধ্যে অত্যন্ত সজাগ, সক্রিয় রয়েছে। যে কোনো পরিস্থিতিতে আমরা কৃষেকের পাশে থেকে বাংলাদেশে কৃষির উৎপাদন ধারা অব্যাহত রাখতে বদ্ধ পরিকর। “আমরা বন্যার ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় যেসব উদ্যোগ গ্রহণ করেছি, আবার বন্যা না হলে ক্ষয়ক্ষতি বহুলাংশে কাটিয়ে ওঠা যাবে এবং এই ক্ষয়ক্ষতি আমাদের খাদ্য উৎপাদনে তেমন প্রভাব পড়বে না বলে আশা রাখি।” আবারও বন্যার পানি বাড়ায় একটু চিন্তায় আছেন জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী রাজ্জাক বলেন, “আমি মনে করি এটা (বন্যা) খুব একটা বেশি দিন থাকবে না, তাড়াতাড়ি পানি নেমে যাবে। “প্রকৃতি সব সময়ই আমাদের একটা অনিশ্চয়তার মধ্যে রাখে। প্রকৃতির ঝুঁকিকে আমরা ইচ্ছে করলেই এড়াতে পারি না। এটা বিবেচনায় রেখেই আমরা আশা করছি (এই বন্যার ফলে) সার্বিকভাবে দেশে খাদ্য উৎপাদনে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে না এবং আমরা বড় কোনো সঙ্কটে পড়ব না।”
নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাসের টিকা বাংলাদেশ কিভাবে পেতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা করতেই ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বাংলাদেশে এসেছেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয় মাঠে বুধবার সকালে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল উদ্বোধন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সফরের মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা। বাংলাদেশ কিভাবে টিকা পেতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা করতেই ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বাংলাদেশে এসেছেন।”
ভারত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের টিকা উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। ঢাকা সফররত শ্রিংলার সঙ্গে বুধবার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে ওই টিকার পরীক্ষার বিষয় থাকছে।
যুক্তরাজ্যের ওষুধ কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনকার সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে অক্সফোর্ডের টিকাটি উৎপাদন করবে ভারতের পুনেভত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান। এই টিকাটি পেতে বাংলাদেশও আগ্রহী। এর পরীক্ষামূলক প্রয়োগের অংশীদার হতে চাওয়ার কথা ইতোমধ্যে ঢাকার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। প্রাথমিক পরীক্ষাগুলোয় সাফল্যের মুখ দেখার পর মানবদেহে প্রয়োগের চূড়ান্ত পরীক্ষায় পর্যায়ে রয়েছে ‘কোভিশিল্ড’ নামের টিকাটি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, “প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের অনেক সমস্যা রয়েছে। এসব বিষয়ও আলোচনায় স্থান পাবে।”
সমস্যার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, “করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের সময়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নিয়মের কারণে ট্রাকে করে ভারত থেকে পণ্য আমদানিতে সমস্যা তৈরি হয়। পরে রেলপথ ব্যবহার করে পণ্য আমদানি হয়েছে। জাহাজেও পণ্য আসছে। “ভারত বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র এবং তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকায় যেকোনো সমস্যাই দ্রুত সমাধান হবে।” সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সিলেট আওয়ামী লীগের সভাপতি নাসির উদ্দিন খান, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ভারতীয় বিমান বাহিনীর বিমানে করে আকস্মিভাবে বাংলাদেশ সফরে আসেন শ্রিংলা।