১৬ই জানুয়ারি, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ , ২রা মাঘ, ১৪২৭ বঙ্গাব্দ
নিজস্ব প্রতিবেদক :
আওয়ামী লীগে অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র চর্চার পাশাপাশি দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালন নীতি অনুসরণ করা হয় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বৃহস্পতিবার এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ একটি সুশৃঙ্খল রাজনৈতিক দল। সাংগঠনিকভাবে কোনো অনিয়ম, দূর্নীতি প্রশ্রয় দেওয়া হয় না। যেকোনো অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া মাত্রই নেয়া হচ্ছে সাংগঠনিক ব্যবস্থা। তিনি বলেন, অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা স্বপ্রণোদিত হয়ে যে শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছিলেন, তা এখনও চলমান আছে। ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। রাজনৈতিক পরিচয়ে অপরাধ করার কোনো সুযোগ আওয়ামী লীগে নেই। দল কখনও কোনো অপরাধীকে রক্ষা করার ঢাল হবে না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, শেখ হাসিনার কাছে অপরাধীর পরিচয় অপরাধীই।।গুটি কয়েক মানুষের অপরাধের জন্য সরকারের অনন্য অর্জনগুলো ম্লান হতে দেওয়া যায় না। অপরাধের দায় ব্যক্তির, দলের নয়। সম্প্রতি দুটি জেলায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে অব্যাহতি দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি কেন্দ্র হতে তৃণমূলের জন্য দলীয় প্রধানের একটি বার্তা। দলের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলাকে এখন গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে। সততা, নিষ্ঠা এবং দলের প্রতি ত্যাগের স্বীকৃতিস্বরুপ জেলা থেকে কেন্দ্রে পুরস্কৃত করা হয়েছে।
কাদের বলেন, পুরো দেশে সাংগঠনিক নেতৃত্বের ওপর দলীয় সভাপতির দৃষ্টি রয়েছে। শেখ হাসিনার কাছে সকলের পারফরম্যান্সের রিপোর্টও রয়েছে। যারা বর্তমানে বিভিন্ন পর্যায়ে জনপ্রতিনিধি রয়েছেন, দলীয় দায়িত্ব পালন করছেন, তাদের কার্যক্রমও গুরুত্ব সহকারে মনিটর করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সকল স্তরের নেতাকর্মীদের সাংগঠনিক শৃঙ্খলা মেনে এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুসরণের মাধ্যমে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান তিনি। নেতাকর্মীদের হুঁশিয়ার করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, মানুষের ভাগ্য বদলের জন্য বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া রাজনৈতিক সংগঠন আওয়ামী লীগ কারো ভাগ্যবদল ও স্বার্থসিদ্ধির জন্য নয়। দলের প্রতি ত্যাগ, সততা ও নিষ্ঠা থাকলে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তৃণমূল থেকে সময় মতো যে কাউকে যেকোনো দায়িত্ব দল এবং সরকারে দিতে পারেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপিতে এখন চতুর্মুখী সংকট চলছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, দলটি বার বার আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েও আন্দোলন করতে পারেনি। একদিকে তারা অপরাজনীতির জন্য জনগণের কাছে নিন্দিত, অপরদিকে দলের ভেতরেও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষ সংকট চলছে। অভ্যন্তরীণ সংকট মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে তারা। সবক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়ে দলটি এখন নির্বাচন কমিশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে মাঠে নেমেছে। গতকাল সোমবার মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন তারা (বিএনপি) অপপ্রচার শুরু করেছে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে। নানা অনিয়ম অসদাচরণের অভিযোগ এনে বিএনপি মূলত নির্বাচন কমিশনকে বিতর্কিত করতে চায়। তাদের এই অপচেষ্টাও হালে পানি পাবে না। কেননা জনগণ তাদেরকে বারবার প্রত্যাখ্যান করেছে। উপনির্বাচনে প্রচারণা না চালিয়ে, পোলিং এজেন্ট না দিয়ে, ভোট কেন্দ্রে না এসে ভোটের দিন হঠাৎ করে দুপুর বেলায় নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করা তাদের অপকৌশলের অংশ। নির্বাচন কমিশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার এই অপকৌশল এরইমধ্যে মরচে ধরে গেছে, ভোঁতা হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি নির্বাচন কমিশন নিয়ে নানা কথা বলে অথচ কমিশনে তাদের প্রস্তাবিত একজন সদস্য রয়েছে। কমিশনের সব সদস্য বিএনপি-সমর্থকদের বসেই বা লাভ কি? প্রধান নির্বাচন কমিশনার থেকে শুরু করে সব কমিশনার যদি বিএনপির হয়, কমিশন তো ভোট দেবে না, ভোট দেবে জনগণ। তারাতো ভোটারদের আস্থা হারিয়ে ফেলেছে, তাই জনগণের ওপর প্রতিশোধ নিতে শুরু করে আগুন সন্ত্রাসের মাধ্যমে। সংকটের কারণে বিএনপির দেশ ও জনগণের কথা ভাববার সময় নেই বলেও এ সময় মতামত ব্যক্ত করেন কাদের।
বিএনপির মহাসচিবকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, দেশ এখন উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রতিটি জনপদে উন্নয়নের ছোঁয়া। আপনারা দেখতে না পেলেও জনগণ দেখতে পাচ্ছে। আপনারাতো দিনের আলোতেও রাতের অন্ধকার দেখতে পান। দেশে কোন দুঃশাসন নেই। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সুশাসনের দিকে আমাদের যে অভিযাত্রা তাতে সমালোচনা না করে সহযোগী হোন। গণতন্ত্রের এগিয়ে যাওয়ার পথকে মসৃন করতে দায়িত্বশীল ও গঠনমূলক রাজনৈতিক দলের ভূমিকা পালন করুন। মন্ত্রী বলেন, বিএনপি ঘরে বসে ফেসবুক গণমাধ্যম বিবৃতি ছাড়া জনগণের ইস্যু নিয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচি দেওয়ার কথা শুধু ভুলেই যায়নি, সক্ষমতাও হারিয়েছে। তিনি বলেন, বিজয়ের চেতনা ধারণ করে মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে জাঁতি আজ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। বিজয়ের এ মাসে সাম্প্রদায়িকতার মূলোৎপাটনের মাধ্যমে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে আসুন আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করি, সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকি।
নিজস্ব প্রতিবেদক :
নতজানু সরকার ক্ষমতায় থাকলে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব থাকে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, এমন একটি সরকারের অধীনে দেশের জনগণ বসবাস করছে, যেখানে তারা দেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বকে বিক্রি করে দিয়েছে। এ দেশের মানুষের মানসম্মান বলে আর কিছু নেই। গতকাল সোমবার সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বাংলাদেশ সীমান্তে নিরীহ মানুষ হত্যার প্রতিবাদে বিএনপির পূর্বঘোষিত কালো পতাকা ও কালো ব্যাচ ধারণ কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী অভিযোগ করে বলেন, গত সাড়ে ১২ বছরে সীমান্তে পাঁচ শতাধিক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু সরকার তার নতজানু নীতির কারণে একটা কড়া প্রতিবাদও করতে পারে না। এখানে যদি সত্যিকারের জনগণের সরকার থাকতো, তাহলে এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারত। যেহেতু এই সরকারের গণভিত্তি নেই তাই তারা অন্য দেশের কাছে নতজানু হয়ে থাকে। নিজের দেশের জনগণের ওপর তারা জুলুম চালায়। তিনি আরও বলেন, যারা সরকারের সমালোচনা করে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়, কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। না হয় গুম করে অথবা বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হতে হয়। অথচ অন্য দেশ এত অন্যায় করছে সেখানে কোনো ধরনের প্রতিবাদ নেই। কোনো ধরনের কূটনৈতিক তৎপরতাও নেই।
কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির সহ দফতর সম্পাদক মো. মুনির হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা কাজী রওনকুল ইসলাম টিপু, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক এজিএম শামসুল হক, বিএনপি নেতা আহসান ঊদ্দিন খান শিপন, শেখ আবদুল হালিম খোকন, মাহবুব মাসুম শান্ত, এবিএম আবদুর রাজ্জাক, আবদুল আউয়াল, কাজী মনির প্রমুখ।
নিজস্ব প্রতিবেদক :
গত সপ্তাহে বড় উত্থানের পর চলতি সপ্তাহের শুরুতেই বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে বড় উত্থান প্রবণতা দেখা দিয়েছে। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস গতকাল সোমবার বিশ্ববাজারে লেনদেন শুরু হতেই স্বর্ণের দাম ১ শতাংশের ওপর বেড়ে গেছে। এতে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম আবারও ১৯শ ডলার স্পর্শ করেছে। বিশ্ববাজারে এমন দাম বাড়ায় দেশের বাজারেও স্বর্ণের দাম বাড়ার পরিকল্পনা করছেন ব্যবসায়ীরা। স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) শিগগিরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। সূত্রটি জানিয়েছে, বিশ্ববাজারে বর্তমানে স্বর্ণের যে দাম, তাতে বাজুস চাইলে ভরিতে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত বাড়াতে পারে। তবে স্বর্ণের দাম কত বাড়বে বা বাড়ানো হবে কি না সে সিদ্ধান্ত বাজুসের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকের আলোচনার ভিত্তিতে নেয়া হবে। সূত্র আরও জানিয়েছে, বিশ্ববাজারের সঙ্গে স্বর্ণের দাম সমন্বয়ের জন্য দুই সপ্তাহ আগে থেকেই দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে।
মাঝে বিশ্ববাজারে কিছুটা দাম কমায় সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়নি। অবশ্য গত সপ্তাহে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে বড় উত্থান হয়। চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসেও লেনদেনের শুরুতে স্বর্ণের দামে বড় উত্থান প্রবণতা দেখা যায়। সুতরাং যেকোনো সময় দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ার সিদ্ধান্ত আসতে পারে। তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, নভেম্বরের শেষ দিকে এসে পতনের মধ্যে পড়ে স্বর্ণের দাম। এতে ২৫ নভেম্বর থেকে দেশের বাজারেও স্বর্ণের দাম কমানো হয়। ভালো মানের, অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম দুই হাজার ৫০৭ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয় ৭৩ হাজার ৮৩৩ টাকা। ২১ ক্যারেটের স্বর্ণ ৭০ হাজার ৬৮৪ টাকা, ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণ ৬১ হাজার ৯৩৬ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণ ৫১ হাজার ৬১৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়। দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমানোর পরও বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম কমার প্রবণতা অব্যাহত থাকে। দফায় দফায় দাম কমে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম সাড়ে ১৭০০ ডলারের কাছাকাছি চলে আসে। ফলে দেশের বাজারে আরেক দফা স্বর্ণের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় বাজুস। গত ১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত বাজুসের কার্যনির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২ ডিসেম্বর থেকে স্বর্ণের দাম কমানো হয়। এ দফায় ভরিপ্রতি এক হাজার ১৬৬ টাকা কমিয়ে ভালো মানের, অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয় ৭২ হাজার ৬৬৭ টাকা। ২১ ক্যারেটের স্বর্ণ ৬৯ হাজার ৫১৭, ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণ ৬০ হাজার ৭৬৯ ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণ ৫০ হাজার ৪৪৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
অবশ্য দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমানোর ঘোষণা দেয়ার দিনই (১ ডিসেম্বর) বিশ্ববাজারে আবার বড় উত্থানের আভাস পাওয়া যায়। দাম বাড়ার প্রবণতা চলে সপ্তাহজুড়ে। এতে গত সপ্তাহে বিশ্ববাজারে ২ দশমিক ২৮ শতাংশ বেড়ে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম এক হাজার ৮৮১ দশমিক শূন্য ৪ ডলারে ওঠে। স্বর্ণের এই দাম বাড়ার প্রবণতা চলতি সপ্তাহেও দেখা যাচ্ছে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ২১ দশমিক শূন্য ৬ ডলার বেড়ে এক হাজার ৯০২ দশমিক ৭২ ডলারে উঠেছে। এতে গতকাল সোমবার লেনদেন শুরুর প্রথমার্ধেই স্বর্ণের দাম ১ দশমিক ১৭ শতাংশ বেড়ে গেল। এর মাধ্যমে ছয় সপ্তাহের মধ্যে বিশ্ববাজারে এখন স্বর্ণের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। বিশ্ববাজারে এই দাম বাড়ার প্রেক্ষিতে দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানো হবে কি না জানতে চাইলে বাজুসের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, ‘আমরা সবসময় বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় রাখার চেষ্টা করছি। এ কারণে এক সপ্তাহে (২৫ নভেম্বর ও ২ ডিসেম্বর) স্বর্ণের দাম দুবার কমানো হয়েছে। এখন বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ার বিষয়টিও আমরা মনিটরিং করছি। বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকলে যেকোনো সময় দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়তে পারে।’
নিজস্ব প্রতিবেদক :
সরকার দেশের কয়েকটি মহাসড়ক থেকে টোল আদায়ের পরিকল্পনা নিয়েছে। সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর টোল আদায়ের জন্য প্রাথমিকভাবে দেশের ৬টি মহাসড়ক চিহ্নিত করেছে। তার মধ্যে জয়দেবপুর-টাঙ্গাইল, টাঙ্গাইল-রংপুর, ঢাকা-চট্টগ্রাম, জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ, গাবতলী-নবীনগর ও ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা-বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক থেকে টোল আদায়ের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ঢাকা-মাওয়া-পটুয়াখালী মহাসড়কে টোল হার নির্ধারণের কাজ চলছে। সবার আগে ওই মহাসড়কটিতে টোল আদায় শুরু করা হতে পারে। বাকি মহাসড়কগুলোয় এখনো উন্নয়নকাজ চলমান বা প্রক্রিয়াধীন। উন্নয়নকাজ শেষে সেগুলোতে সওজ অধিদপ্তর পর্যায়ক্রমে সেসব মহাসড়কে টোল চালুর পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে। সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ঢাকা থেকে মাওয়া হয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৫৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ৮ লেনের মহাসড়ক চলতি বছরের মার্চে চালু করা হয়েছে। তার মধ্যে চার লেন করা হয়েছে অ্যাকসেস কন্ট্রোল মহাসড়কের আদলে। নেজন্য মহাসড়কটিকে এক্সপ্রেসওয়ে হিসেবে অভিহিত করছে সওজ অধিদপ্তর। ওই মহাসড়কটিতে টোল হার নির্ধারণের কাজ চলছে। পদ্মা সেতু চালুর পর থেকে ওই মহাসড়কে টোল আদায় কার্যক্রম শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাছাড়া দেশের অর্থনীতির লাইফলাইন হিসেবে খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কটি বিগত ২০১৬ সালের মাঝামাঝিতে চার লেনে উন্নীত করা হয়। বর্তমানে মহাসড়কে থাকা ৩টি সেতু ও সীতাকু-ে একটি ওজন স্টেশনে টোল আদায় করা হচ্ছে। মহাসড়কটি আরো প্রশস্ত ও সার্ভিস লেন যুক্ত করার জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা এবং বিস্তারিত নকশা তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সড়কটি প্রশস্ত করার কাজ শেষ হলে টোল আদায় শুরু করার পক্ষে মত দিয়েছে সওজ অধিদপ্তর।
সূত্র জানায়, বিগত ২০১৬ সালের মাঝামাঝিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মতোই চালু হয় জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়ক। ওই মহাসড়কও আরো প্রশস্ত ও সার্ভিস লেন যুক্ত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। উন্নয়ন শেষে মহাসড়কটি থেকে টোল আদায় করা হবে। তাছাড়া ২০১৬ সালে ঢাকার জয়দেবপুর থেকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পর্যন্ত মহাসড়কটি চার লেনে উন্নয়নের কাজ শুরু হয়। শুরুতে সার্ভিস লেনের সংস্থান না থাকলেও পরে তা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সেজন্য প্রকল্পটি শেষ করতে কিছুটা বাড়তি সময় লাগছে। কাজ শেষ হলে ওই মহাসড়কটিতে টোল আদায়ের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। একইভাবে গাবতলী-নবীনগর মহাসড়কটিও এক্সপ্রেসওয়েতে উন্নীত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হওয়ায় চালুর পর থেকেই ওই মহাসড়ক থেকে টোল আদায় হবে।
সূত্র আরো জানায়, বর্তমানে সওজ অধিদপ্তর দেশের ৩টি সড়ক-মহাসড়কের কিছু অংশে টোল আদায় করছে। ৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়ক, ১৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে চট্টগ্রাম বন্দরের সংযোগ সড়ক এবং ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের জগদীশপুর-শেরপুর অংশে টোল চালু রয়েছে। বিগত ২০১৪ সালের টোল নীতিমালা অনুযায়ী ওই তিনটি সড়কে টোল আদায় হচ্ছে। টোল নীতিমালা অনুযায়ী জাতীয় মহাসড়কের ভিত্তি টোল নির্ধারণ করা হয়েছে কিলোমিটারপ্রতি ১ টাকা ৫০ পয়সা। ওই হিসেবে ট্রেইলারে টোল পড়বে কিলোমিটারপ্রতি ৩ টাকা ৭৫ পয়সা। ভারী ট্রাকে কিলোমিটারপ্রতি টোল আদায় হবে ৩ টাকা। মাঝারি ও ছোট ট্রাকের কিলোমিটারপ্রতি টোল হার যথাক্রমে ১ টাকা ৫০ পয়সা ও ১ টাকা ১২ পয়সা। বাস ও মিনিবাসের কিলোমিটারপ্রতি টোল হার যথাক্রমে ১ টাকা ৩৫ পয়সা ও ৯০ পয়সা। একইভাবে গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে ট্রেইলারে কিলোমিটারপ্রতি ৫ টাকা, ভারী ট্রাকে ৪ টাকা, মাঝারি ও ছোট ট্রাকে ২ ও ১ টাকা ৫০ পয়সা। বাস ও মিনিবাসের টোল হার যথাক্রমে কিলোমিটারপ্রতি ১ টাকা ৮০ পয়সা ও ১ টাকা ২০ পয়সা।
এদিকে সওজ অধিদপ্তরের সর্বশেষ মাসিক সমন্বয় সভায় মহাসড়ক থেকে টোল আদায়ের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় টোল আদায়ের কাজটি সমন্বিতভাবে বাস্তবায়ন করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। পাশাপাশি একই রাস্তায় এক যানবাহনকে যেন একাধিকবার টোল দিতে না হয় সে বিষয়েও নজর রাখতে বলা হয়। অন্যদিকে মহাসড়কে টোল আদায় প্রসঙ্গে সওজ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ জানান, ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে টোল আদায়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাজগুলো এগিয়ে নেয়া হচ্ছে। আরো কয়েকটি মহাসড়কেও টোল আদায় করা হবে। তবে টোল আদায়ে যাওয়ার আগে সড়ক ব্যবহারকারীদের সওজ প্রয়োজনীয় সবটুকু সুবিধা দিতে চায়। সেজন্য মহাসড়কগুলোকে উন্নতমানের এবং বাধাহীনভাবে চলাচল উপযোগী করে গড়ে তোলা হচ্ছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক :
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে শহীদ ডা. মিলন পালন করেছিলেন অকুতোভয় সৈনিকের ভূমিকা। তার আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে নয় বছরের স্বৈরাচারবিরোধী গণতান্ত্রিক সংগ্রাম চূড়ান্ত বিজয়ের দিকে ধাবিত হয়।
বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বাণীতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একথা বলেন। প্রতিবছর ২৭ নভেম্বর এরশাদবিরোধী আন্দোলনে শহীদ ডা. মিলন দিবস পালন করা হয়। মির্জা ফখরুল বলেন, স্বৈরাচার হটিয়ে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় ডা. মিলন ছিলেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞা। বুকের রক্ত ঢেলে তিনি এদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পথ প্রশস্ত করে গেছেন। যে পথ ধরে দেশে স্বৈরাচারের পতন ঘটে এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশে গণতন্ত্রের নবযাত্রা শুরু হয়। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বিগত ১১ বছর ধরে আবারও মানুষের সব অধিকার কেড়ে নিয়ে গণতন্ত্রকে সমাধিস্থ করেছে। দেশের মানুষ তাদের অধিকার হারিয়ে ফেলেছে। জনগণের কাছ থেকে দেশের মালিকানা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এখন গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার মাধ্যমেই আমরা কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারি। সেজন্যই প্রথমে আমাদের গণতন্ত্রের আপসহীন নেত্রী খালেদা জিয়াকে স্বৈরাচারের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করতে হবে। সে লক্ষ্য অর্জনে শহীদ ডা. মিলনের আত্মত্যাগ আমাদেরকে প্রেরণা জোগাবে।
নিজস্ব প্রতিবেদক :
যেসব অনলাইন নিউজপোর্টাল সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সদস্য লেখক সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আল-আরাফা ইসলামি ব্যাংকের ডিজিএম শফিকুর রহমান। ডিআরইউ সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরী।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সাংবাদিক নামধারীদের চিহ্নিত করার দায়িত্ব সাংবাদিক সংগঠনগুলোকে নিতে হবে। এদের জন্য সাংবাদিক সমাজের বদনাম হচ্ছে। আইনজীবীরা যেমন ভুয়া আইনজীবী খুঁজে বের করেন, সাংবাদিক সংগঠনগুলোকেও ভুয়া সাংবাদিক খুঁজে বের করতে হবে। এর জন্য সরকার সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর ডিজিটাল বাংলাদেশের যখন ঘোষণা দেয়, তখন অনেকেই সেটি নিয়ে হাসাহাসি করেছিলেন। আজকে সাড়ে ১১ বছর পর ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে প্রচুর মানুষ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছে। আমার ধারণা, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় গার্মেন্ট ব্যবসা থেকে আয়ের কাছাকাছি চলে যাবে। তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী সবসময় সমালোচনাকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখেন। আমি এর সঙ্গে যুক্ত করতে চাই সমালোচনা করবেন, কিন্তু ভালো কাজের প্রশংসাও করতে হবে। অনুষ্ঠানে ডিআরইউয়ের সদস্য ৩০ জন লেখককে সম্মাননা দেওয়া হয়। সম্মাননাপ্রাপ্তরা হলেন- দীপন নন্দী (বাংলানিউজ), হক ফারুক আহমেদ (যুগান্তর), ইন্দ্রজিৎ সরকার (সমকাল), সেলিনা শিউলী (বাসস), মোরসালিন আহমেদ (ডেইলি স্পোর্টস), জাকির হোসেন (জাগরণ), মিজান রহমান (মুক্তবাজার প্রতিদিন), এম মামুন হোসেন (সময়ের আলো), রিয়াজ চৌধুরী (এশিয়ান মেইল), সাজেদা পারভীন সাজু (জিটিভি), আমীন আল রশীদ (নেক্সাস টিভি), মোতাহার হোসেন (বর্তমান), প্রণব মজুমদার (দৈনিক শিরোনাম), আমিরুল মোমেনীন মানিক (চেঞ্জটিভি), রকিবুল ইসলাম মুকুল, আবু আলী (আমাদের সময়), মিজান মালিক (যুগান্তর), মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ (শেয়ারবিজ), শফিউল্লাহ সুমন (বিটিভি), তরিকুল ইসলাম মাসুম (চ্যানেল আই), আবু হেনা ইমরুল কায়েস (বাংলাভিশন), মাইদুর রহমান রুবেল (আরটিভি), মাসুম মোল্লা (ডেইলি স্টার), সায়ীদ আবদুল মালিক (দৈনিক বাংলা), চপল বাশার (ফ্রিল্যান্স), আশীষ কুমার দে (পিটিবি নিউজ), জামশেদ নাজিম (জিটিভি), শামসুজ্জামান শামস (ভোরের কাগজ), আহমেদ মুশফিকা নাজনীন (ইটিভি) এবং হাবিবুল্লাহ ফাহাদ (ঢাকা টাইমস)। অনুষ্ঠানে ডিআরইউ-এর নিয়মিত প্রকাশনা রিপোর্টার্স ভয়েজের অনলাইন ভার্সনের উদ্বোধন করা হয়।
নিজস্ব প্রতিবেদক :
দ্বিতীয় ধাপে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে এবার ভারত থেকে ফিরতেও বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের করোনা নেগেটিভ সনদ লাগবে বলে নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে এ নির্দেশনা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে যে কোনো দিন কার্যকর হতে পারে বলে জানা গেছে। গত বুধবার বিকেলে এ ধরনের একটি নির্দেশনাপত্র এসেছে বেনাপোল ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগে। তবে এ সিদ্ধান্ত স্থলপথের পাশাপাশি রেল ও আকাশ পথেও কার্যকর হচ্ছে। বেনাপোল ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিকেল কর্মকর্তা সুজন সেন জানান, আগে বাংলাদেশিদের ভারতে যাওয়ার জন্য এবং ভারতীয়দের বাংলাদেশে আসার জন্য করোনা নেগেটিভ সনদ বাধ্যতামূলক ছিল। তবে এবার বাংলাদেশিদের ভারত থেকে ফেরার সময় এবং ভারতীয়দের ভারতে ফেরার সময় করোনা নেগেটিভ সনদ দেখাতে হবে বলে নির্দেশনা এসেছে। তবে ইতোমধ্যে বাংলাদেশে অবস্থানরত ভারতীয়দের আসা ও যাওয়ার সময় করোনা পরীক্ষার সনদ গ্রহণের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশিদের নেগেটিভ সনদ গ্রহণের কার্যক্রম শুরু হবে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের ওসি আহসান হাবিব জানান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি চিঠি হাতে পেয়েছি। ভারতে যাওয়া ও ভারত থেকে ফেরার সময় ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দেশি-বিদেশি সব ধরনের যাত্রীদের করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ সনদ সঙ্গে থাকতে হবে বলে বলা হয়েছে। বর্তমানে পূর্বের নিয়মে কার্যক্রম চলছে। পরবর্তী নির্দেশনা পৌঁছানো মাত্র করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে ইমিগ্রেশন পুলিশ যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করবে। বাংলাদেশি পাসপোর্টযাত্রী আবু তালেব জানান, করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে তিনি স্বাগত জানান। তবে দেশে করোনা পরীক্ষা করতে ভোগান্তির শেষ নেই। সময় মত রিপোর্ট মিলছে না। অনেকে সময় মতো রিপোর্ট না পাওয়ায় ভ্রমণ করতে পারছেন না। আবার ভারতে এ পরীক্ষা করাতে তাদের এমন ভোগান্তি আরও বাড়বে। দুর্ভোগ কমাতে সরকারের প্রতি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।
ভারতগামী যাত্রী আনিছুর রহমান বলেন, বাংলাদেশিরা যে পরিমাণ ভারতে যান তার মাত্র ৫ শতাংশ বিদেশি আসেন বাংলাদেশে। জরুরি ভারত ভ্রমণে বাংলাদেশে করোনা পরীক্ষা করতে ১৫০০ টাকা লাগছে। তবে ভারতে বাংলাদেশিদের জন্য করোনা পরীক্ষার ফি কত পড়বে তা এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। দুইবার করোনা পরীক্ষায় অর্থের পাশাপাশি ভোগান্তি বাড়বে বাংলাদেশিদের। এতে বিশেষ করে বেকায়দায় পড়বেন চিকিৎসার জন্য ভারতে ভ্রমণকারী রোগীরা। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে আলোচনা করে পরীক্ষা কার্যক্রম সহজ ও কম খরচে করার আহ্বান জানান তিনি। জানা যায়, বেনাপোল থেকে ভারতের প্রধান বাণিজ্যিক শহর কলকাতার দূরত্ব মাত্র ৮৪ কিলোমিটার। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় এ পথে চিকিৎসা, ব্যবসা ও ভ্রমণে পাসপোর্টধারী যাত্রীরা বেশি যাতায়াত করেন। প্রতি বছর এ পথে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে প্রায় ৩০ লাখ দেশি-বিদেশি যাত্রী যাতায়াত করেন। এদের কাছ থেকে ভ্রমণ কর বাবদ সরকারের রাজস্ব আসে প্রায় ১০০ কোটির কাছাকাছি। এর আগে বাংলাদেশ ও ভারতে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে দুই দেশের সরকার নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করে। গত ১৩ মার্চ ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞায় যাতায়াত বন্ধ হয় বাংলাদেশিদের। বাংলাদেশেও আটকে পড়েন ভারতীয়রা। গুরুতর রোগীরা চিকিৎসার জন্য ভারতে যেতে না পেরে বেকায়দায় পড়েন। যোগাযোগ বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীরাও বড় ধরনের লোকসানে ছিলেন। পরবর্তীতে ৫ মাস পর প্রথমে বাংলাদেশে আটকে পড়া ভারতীয়দের দেশে ফেরার সুযোগ হয়। পরে বাংলাদেশিদের মেডিকেল আর বিজনেস ভিসায় যাতায়াতের সুযোগ দেয় ভারত সরকার।
নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে পানি নিষ্কাশনের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তরের যে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ, তা বাস্তবায়িত হলে নগরীতে জলাবদ্ধতা নিরসনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র। বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক পরামর্শ সভার শেষে দুই মেয়র এ প্রতিশ্রুতি দেন। এ সময় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আজকের দিনটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা দুই সিটির মেয়র চেয়ে আসছিলাম ঢাকা শহরের খালগুলো আমাদের আওতায় দিয়ে দিতে। আজ সে বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে এখানে অনেক টেকনিক্যাল ব্যাপার রয়েছে। যেমন আমাদের সক্ষমতা বিষয়সহ আইনগত বিভিন্ন দিক রয়েছে। আমরা নগরবাসীকে বলতে পারি এটি একটি অনেক পুরনো দিনের সমস্যা। এখানে খাল, সুয়ারেজ ড্রেন থেকে শুরু করে অনেক চ্যালেঞ্জ ছিলো। জনগণের পাশে থেকে জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ থেকে জনগণকে রক্ষার চেষ্টা করব।
তিনি বলেন, আমরা খালগুলো থেকে পেয়েছি ফ্রিজ, টিভি, জাজিমসহ ডাবের খোসা। এ ছাড়া খালের দুই পাশ অবৈধভাবে দখল হয়ে গেছে। আমরা খালগুলো উদ্ধার করবো। খালগুলো আরও গভীর করা এবং দুই পাড়ে সাইকেল লেন, ওয়াকওয়ে এবং গাছ দিয়ে দৃষ্টি নন্দন পার্ক করা অবশ্যই একটি কঠিন কাজ। সদিচ্ছা থাকলে আমাদের নদীগুলোর মতো খালগুলোও প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দখলের কবল থেকে উদ্ধার করতে পারব। সরকারি জমি অন্য কেউ দখল করে নিয়ে যাবে আমরা চেয়ে চেয়ে দেখবো সে দিন শেষ। এ ক্ষেত্রে আইনের প্রয়োজন হলে নেব। দক্ষিণ সিটি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, আজকে আমরা দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত সমস্যা নিরসনে একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি। ১৯৮৮ সালে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনকে দেয়ার কথা থাকলেও দেয়া হয় ওয়াসাকে। ফলে এসব জলাশয়, পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থাসহ নর্দমার দায়িত্ব ওয়াসা পায়। সে থেকে আজ পর্যন্ত প্রায় ৩০ বছরের বেশি সময় ঢাকাবাসী দুর্ভোগে নিমজ্জিত ছিল। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে আমরা একটি নবসূচনা করতে পারছি। আমি আশাবাদী সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজের মাধ্যমে অচিরেই ঢাকাবাসিকে এর সুফল দিতে পারব।
এই দায়িত্ব কতখানি চ্যালেঞ্জিং মনে করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তাপস বলেন, ঢাকাবাসী নির্বাচনের মাধ্যমে দুজন নেতা নির্বাচিত করেছে। সেই মেনডেটের কারণে আমরা সাহস করেছি ঢাকাবাসীকে আমরা এই সমস্যা থেকে সমাধান দেবো। সকল প্রতিকূলতা নিয়েই আমরা এই বিশাল কর্মযজ্ঞ হাতে নিয়েছি। এ সময় ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান বলেন, ১৯৮৮ সালে রাষ্ট্রপতির একটি সিদ্ধান্ত ছিল ওয়াসাকে দিয়ে দেয়া। আমরা যখন ২০০৯-১০ সালে দায়িত্বে আসার পর ২০১২ সাল থেকে অনেকবার বলেছি এটা যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব সিটি করপোরেশনকে হস্তান্তর করা হোক। আজকে সেটার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। ওয়াসা ব্যর্থ কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রশ্নই আসে না। যে কাজ আমাদের না সেটা আমরা এত দিন করেছি। এজন্য আমাদের ধন্যবাদ দেয়া উচিৎ। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, স্থানীয় সরকারের সিনিয়র সচিব হেলালউদ্দিন আহমদ প্রমুখ।