নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলায় পশ্চিম সোনাদিয়া চৌরাস্তা বাজারের পাশে জনৈক মরহুম হাজি আলমগির হোসেন প্রকাশে দিলাল মেম্বার। নিজ সম্পত্তির ওপর নিজ অর্থায়নে ১৯৮৯ সালে এলাকার কোমলমতী শিশু তথা দেশের ভবিষ্যত প্রজন্মকে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার মানসিকতায় একটি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করেন। যা পরবর্তীতে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর ঐতিহাসিক ঘোষণার কারণে জাতীয়করণ করা হয়। স্কুলটির নাম হয় ‘পশ্চিম সোনাদিয়া মাহমুদুল হক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়’। বিগত ৩০ বছর অত্যন্ত সুনাম এবং সাফল্যের সাথে স্কুলটি তার দ্বীপ্ত যৌবন ধরে রেখেছে। যা সরজমিনে গিয়ে এলাকাবাসীর সাথে আলাপচারিতায় প্রতীয়মান হয়। প্রতিষ্ঠানটির নির্মম পরিহাস ২০১৮ সালে চরচেঙ্গা ‘হিসাবিগো’ বাড়ির জনৈক হেদায়েত উল্ল্যাহ ও তার সহধর্মিনী মনোয়ারা বেগম উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে বদলি হয়ে আসেন। শুরু হতে থাকে প্রতিষ্ঠানটির গৌরব উজ্জল ইতিহাসের পরিসমাপ্তি। কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা যায়- প্রধান শিক্ষক হেদায়েত উল্ল্যাহর দিনের বেশির ভাগ সময় কাটে জমির দালালি, জমি দখল, প্রকাশ্য স্কুলে কোমলমতী শিশুদের সামনে ধুমপান, স্কুল ফাঁকি দিয়ে তার ব্যক্তিগত স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে থাকেন এবং অনিয়ম দূর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা তার নিত্যদিনের কর্ম-তালিকায়। তার স্ত্রীকে মাত্রাতিরিক্ত সুযোগ সুবিধা প্রদান করার সুবাধে শিক্ষা ব্যবস্থা অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় পড়ে বলে পরিলক্ষিত হয়।
হেদায়েত উল্যাহর স্কুলে অনিয়ম এবং স্বেচ্ছাচারিতা হাতিয়া উপজেলা চেয়ারম্যানের নজরে আসে। তিনি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসকে উক্ত হেদায়েত উল্ল্যাহকে শাস্তিমূলক বদলির নির্দেশনা দেওয়ায় হাতিয়া উপজেলার দূর্নীতিগ্রস্ত প্রথমিক শিক্ষা অফিস অনৈতিকভাবে প্রবাহিত হয়ে মাননীয় উপজেলা চেয়ারম্যানের নির্দেশ উপেক্ষা করে স্বস্থানে বহাল রাখে বলে বিশ^স্ত সূত্রে জানা যায়। যা একটা সুখ্যাতি সম্পন্ন গৌরব উজ্জ্বল প্রতিষ্ঠানের ধ্বংসের প্রতিফলন বলে মনে করেন এলাকার সচেতন মহল থেকে শুরু করে অবিভাবকবৃন্দ।
অনুসুন্ধানকালে জানা যায়- স্বামী-স্ত্রী একই স্কুলে আসার সুবাধে একজন উপস্থিত থাকেন অন্যজন সবসময়ই অনপুস্থিত যা প্রকৃত দৃশ্যমান।
৪ঠা জুন ১০১৯ দাতা এবং বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি হাজি আলমগির হোসেন প্রকাশে দিলাল মেম্বার মারা গেলে ওই হেদায়েত উল্ল্যাহ ১৯-৩-২০২০ ইং তারিখে সভা ডেকে সহসভাপতি আলাউদ্দিনকে দিয়ে সভার কার্য বিবরণিতে সভাপতি হিসেবে স্বাক্ষর করান। যা নিয়ম-নীতি বহির্ভূত; নিয়মানুযায়ী সে হওয়ার কথা ভারপ্রাপ্ত সভাপতি। যেহেতু সভাপতি মৃত এবং প্রতিষ্ঠানের নতুন কার্যকরী কমিটি গঠন হয়নি। উল্লেখিত কার্যসভায় উক্ত আলাউদ্দিনকে সভাপতি করে একটি ‘পকেট কমিটি’ গঠন করেন। যেখানে হেদায়েত উল্ল্যাহর পরিবারের তিনজন, কমিটির সংখ্যা ৯ জন যা সম্পূর্ণরূপে উদ্দেশ্য প্রনোদিত এবং ব্যক্তিস্বার্থে অনিয়ম দূর্নীতিকে বৈধতা দেওয়ার হীন মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ। সচেতন মহল মনে করেন, উপজেলা শিক্ষা অফিসের যোগসাজসে উক্ত কমিটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, উক্ত কমিটিতে দাতা পরিবারের সদস্য এবং একজন ইউপি সদস্য থাকা বাধ্যবাধকতা থাকলেও হেদায়েত উল্ল্যাহ তা অগ্রাহ্য করে কমিটি গঠন করেন। উপজেলা প্রথমিক শিক্ষা অফিস কিভাবে উক্ত কামিটির অনুমোদন দেন? প্রশ্নটি অত্যন্ত স্বাভাবিক নয় কি?
(চলমান)